কাগজপত্রহীন অভিবাসীদের পাশে বাংলাদেশি ডা. ফেরদৌস খন্দকার

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে রয়েছে বিপুল সংখ্যক কাগজপত্রহীন অভিবাসী। তাদের মধ্যে অনেক বাংলাদেশিও রয়েছেন। করোনা মহামারীর এই সময়টাতেও এসব কাগজপত্রহীন মানুষের জন্যে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে কোন ধরণের অর্থনৈতিক প্রণোদনা নেই। ফলে বিরাটসংখ্যক মানুষ সীমাহীন দূর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। এবার নগদ অর্থ এবং খাদ্য সহায়তা নিয়ে সেইসব অভিবাসীদের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন ডা. ফেরদৌস খন্দকার।
এমনিতেই হাজারো বিপদ ও ঝুঁকি মাথায় নিয়েই করোনা মহামারীর এই দূর্যোগকালে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন খ্যাতিমান চিকিৎসক ডা. ফেরদৌস খন্দকার ও তাঁর দল। কেবল নিউইয়র্ক নয়, একইসাথে বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে অনন্য নজির স্থাপন করেছেন তারা। কমিউনিটির মধ্যে পরম আস্থা এবং ভালোবাসার জায়গা তৈরি করতে পেরেছেন তারা।
জ্যাকসন হাইটসের নিজস্ব অফিসে একটি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করেছেন ডা. ফেরদৌস খন্দকার। সেই রুম থেকে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত নানা ধরণের সেবামূলক কাজ চলছে। একটি ফোন নম্বর সবার জন্যে দেয়া হয়েছে। সহায়তা চেয়ে অনেকে সেই ফোন নম্বরে যোগাযোগ করছেন। অনেকে এসে খাবার নিয়ে গেলেও, বিরাট সংখ্যক মানুষকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার পৌঁছে দিতে হচ্ছে। একদিকে করোনা, অন্যদিকে কাগজপত্র না থাকায় এই সময়ে ভয়ে অনেকে বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। আর তাদেরকে খাবার ও অর্থ সাহায্য পৌঁছে দেয়ার জন্যে একটি স্বেচ্ছাসেবী দল গঠন করা হয়েছে। এ কাজে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ স্টুডেন্ট এসোসিয়েশনের সদস্যরা। সেই সাথে ডা. ফেরদৌস খন্দকারের স্ত্রী আনজুমান আরা বেগম দিনা, তার দুই ছেলে আকিব খন্দকার ও নাকিব খন্দকার প্রত্যক্ষ সহায়তা করছেন। সেই সাথে তার দলের সদস্য আবু ইউসুফ টিটু, আব্দুল্লাহ আল মারুফ এবং জুয়েল নূর কাজ করে যাচ্ছেন। খাবার কিনে আনা, প্যাকেট করা থেকে শুরু করে পৌঁছে দেয়ার মতো বিরাট কর্মযজ্ঞ চলছে এখন।
ডা. ফেরদৌস খন্দকার জানিয়েছেন, প্রথমে ভাবা হয়েছিল দুই’শ জনকে এই সহায়তা দেয়া হবে। প্রত্যেকের জন্যে থাকবে এক’শ ডলারের একটি গিফট কার্ড এবং এক মাসের প্রয়োজনীয় খাবার। গিফট কার্ডটি তারা যেকোন জায়গায় খরচ করতে পারবে। কিন্তু মানুষের প্রয়োজন অনেক বেশি। বিপুল সাড়া পাওয়া গেছে। এজন্যে আপাতত সহায়তা গ্রহণকারীর সংখ্যা দ্বিগুণ, অর্থ্যাৎ চার’শ করা হয়েছে। আরও হয়তোবা বাড়াতে হবে।
মাউন্ট সিনাই হাসপাতালের এই মেডিসিন বিশেষজ্ঞ বলেন, “যাদের কাগজপত্র নেই, তারা এখন বড় অসহায় অবস্থায় রয়েছেন। একদিকে থাকার বৈধতা নেই; অন্যদিকে কাজ নেই। তাদের সহযোগিতা অনেক বেশি প্রয়োজন”। যার যার অবস্থান থেকে এসব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সবার প্রতি আহবান জানিয়েছেন ডা. ফেরদৌস খন্দকার। তথ্যসূত্র ঃ-ইউএস বাংলা ২৪.কম