আইনজীবী আনোয়ার হোসেন হত্যা মামলার মূল আসামি এখনো অধরা

আইনজীবী আনোয়ার হোসেন হত্যা মামলার মূল আসামি শাহজাহান চৌধুরী মাহি এখনো অধরা। অবশ্য পুলিশের দাবি আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী শিপা বেগমের পরকিয়া প্রেমিক মাহিকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে। পুলিশের হাতে গ্রেফতার আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী শিপা বেগমের রিমান্ড চলছে। মাহি গ্রেফতার হলে দ্রুত এই হত্যাকান্ডের মোটিভ (রহস্য) বেরিয়ে আসবে বলে প্রত্যাশা পুলিশের। অন্যদিকে, আইনজীবী আনোয়ার হোসেন হত্যা মামলার মূল আসামীকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন চলছে। আজ বুধবার বেলা ২টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করবেন সিলেট সদর উপজেলার হাটখোলা ইউনিয়নবাসী।
জানা যায়, গত ৩০ এপ্রিল রমজানের দিনে মারা যান এডভোকেট আনোয়ার হোসেন। ফজরের নামাজের পর তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন। বিকাল ৩টায় স্ত্রী শিপা বেগম স্বজনদের ফোন করে জানান, আনোয়ার হোসেনের মৃত্যুর খবর। শিপার কথায় স্বাভাবিক মৃত্যু মেনে নিয়ে আনোয়ার হোসেনকে স্বজনরা গ্রামের বাড়ি সিলেট শহরতলীর শিবের বাজারে দাফন করেন। কিন্তু আনোয়ার হোসেনের মৃত্যুর ১০ দিনের মাথায় স্ত্রী শিপা বেগমের বিয়ের খবর নিয়ে আনোয়ার হোসেনের পরিবারের স্বজনদের সন্দেহ হয়। এরপর তারা খবর নিয়ে জানতে পারেন খালাতো ভাই শাহজাহান চৌধুরী মাহির সঙ্গে শিপা বেগমের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং এডভোকেট আনোয়ার হোসেনের মৃত্যুর পর শিপা তার প্রেমিক মাহিকেই বিয়ে করেছেন। পরবর্তীতে ফোনালাপে শিপা মামলার বাদী এডভোকেট আনোয়ার হোসেনের ভাই মনোয়ার হোসেনের কাছে সেটি স্বীকার করেন। ১ জুন এ ঘটনায় আদালতে এডভোকেট আনোয়ার হোসেনকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে মামলা করেন মনোয়ার হোসেন। আদালতের নির্দেশে সিলেটের কোতোয়ালি থানা পুলিশ মামলা রেকর্ড করে শিপাকে গ্রেফতার করে। মাহি ও শিপা ছাড়া এ মামলার আসামিরা হলেন- শিপার মা গোলাপগঞ্জের রণকেলী গ্রামের আজমল আলীর স্ত্রী রাছনা বেগম, কতোয়ালি থানার রায়নগর ১০৪নং বাসার মোতাহির আলীর ছেলে এনামুল হাসান, জৈন্তাপুরের হরিপুর গ্রামের মৃত সোনা মিয়ার ছেলে এসএম জলিল, বিমানবন্দর থানার কালাগুল এলাকার মৃত কালা মিয়ার ছেলে জাকির আহমদ, গোয়াইনঘাটের ছোটখেল গ্রামের জামাল মিয়ার ছেলে ফয়সল আহমদ ও সুবিদবাজার এলাকার লন্ডনী রোডের নাইমার।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) মো. ইয়াসিন জানান, শিপাকে গ্রেফতারের পর থেকে মাহি পলাতক রয়েছে। তাকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আদালত শিপার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। আশা করছি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে। এছাড়া, শিপা ও মাহির কললিস্ট সংগ্রহের জন্য পুলিশ আবেদন করেছে। কললিস্ট পেলে অনেক কিছুই পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।
মামলার এজাহারে নিহত আনোয়ার হোসেনের ভাই মনোয়ার হোসেন অভিযোগ করেছেন তার ভাই এডভোকেট আনোয়ার হোসেন সকালে যখন কর্মস্থলে চলে যেতেন তখন মাহি মোটরসাইকেল নিয়ে তার বাসার সামনে আসতো। এ সময় শিপাকে নিয়ে মাহি নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরা করতো। এডভোকেট আনোয়ার হোসেন বাসায় আসার আগেই মাহি প্রেমিকা শিপাকে বাসার সামনে এসে নামিয়ে দিয়ে যেতো। বিষয়টি জানার পর এডভোকেট আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে শিপা বেগমের সাংসারিক দূরত্বের সৃষ্টি হয় এবং মৃত্যুর পূর্বে তারা দু’জন দুই কক্ষে বসবাস করতেন।
অন্যদিকে, আইনজীবী আনোয়ার হোসেনের হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন আইনজীবীরা। তারা আসামীদের গ্রেফতারের দাবি জানান। আজ বুধবার বেলা ২টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধনের ডাক দিয়েছেন সিলেট শহরতলীর হাটখোলা ইউনিয়নবাসী। তারা অবিলম্বে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানান।